বুধবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১০

আহা

আহা সেকি সময় ছিল
আকাশ ছিল আকাশের মত নীল
পাখির ডানায় শিশিরের গন্ধ ছিল মাদকের মত
আর এখন নীল রং খুজতেআমার ছোটবেলার জলরঙের বাক্সে হানা দিতে হয়
আর মাদকের জন্য এখন ত পথে ধূম্রশলাকার লোভনীয় আয়োজন।
নারীরা আগে কাম্য ছিল
প্রেমিকারা ছিলো দুর্ল্ভ
এখন সুলভে সাজানো শোপিস পাওয়া যায়
শুধু তারা আগের মত রুমালে ভালবাসা একে দেয়না
আহা কি চমৎকার ছিল
সেই রুমালে নারীদের ছোয়া।
আহা সেকি সময় ছিলো
আহা আহা..................।

শিরোনামহীন-১

অপেক্ষা করতে করতে আমি ক্লান্ত হয়ে গেছি
অবসন্নতার শতপদী অট্টালিকারা
আমায় খুজে নিতে চায়
তাদের ছায়ায়।
আমার চামড়ার সাথে সেটে যাওয়া মেরুদন্ড
সেই ছায়ায় পুড়তে পুড়তে
আজ বিষাদেরই মতো নির্ঝর।
এখনো সার্কাস দেখা হয়নি আমার
অনাঘৃত জুঁই ফুলের গন্ধ নেয়ার মত বয়স হয়েছে কবেই,
অবকাশ মেলেনি।
সবুজ ঘাসের মাঝ দিয়ে শেষ বিকেলের আলোয়
এক নারীকে দেখেছিলাম,
তারপর কতদিন হয়ে গেলো
রবিনসন ক্রুসোর মতো
দাগ কেটে,
দিন গুনে,
ভরিয়ে ফেলেছি চার দেয়াল।
আজ মনে হয়
যদি আমার চারটা দেয়াল
হয়ে যেতো যাদুর আয়না
ছোট্টবেলার মতই আবার বায়না করতাম
ঘাসফড়িং দেখার।

ক্ষতগল্প

অবকাশের মত আকাশের নীচে বসে
থেকে, গজানো শিকড়ের সাথে তর্ক
যুদ্ধে নামা বানর, যদি জানত কে
ঈশ্বর আর কে ডারউইন, বিবর্তিত
হয়ে যেত প্রশ্নটাই, লাভ হত সকল
দ্রব্য আটানি ভগাঙ্কুরের, ডানপিটে
কিশোরীর পায়ে বেড়ী দিলে, তার
কোনো মূল্য নেই, মূল্যহীন ছেড়া
ডাকটিকেট, ঝুলে পড়া স্তনের নারী
শুধু সেই গল্পের ভেতরের গল্পটাই
জলের তলের গল্প, যদি মাছশিকারী
জানতই, মোক্ষমই হত তবে মোক্ষশিকারী।

সুগন্ধ তোমার ঋন

কিভাবে যেন খরচ হয়ে যায়
পথের ধূলো, রঙ্গীন সুতো সব
প্রতিফলিত রশ্মি নাকি আয়নায়
রঙধনুর মত ধূম্রজাল সৃষ্টি করে
তার মায়ায় পড়ে, নার্সিজমে
ভুগতে থাকা মায়াবতী অবসন্নতায়
খরচ করে সময়, নাটাই, ঘাসফুল
হিসেবী হতে চেয়েও মাস শেষে তাই
তোমার কাছেই ঘাসফুল ধার চাই
এভাবেই চলে আসা নদীর কাছে
বাতাস, নৌকা, বন্ধুত্বের রাতে
স্রোতে স্রোতে একটু সুগন্ধি
গন্ধে গন্ধে ব্রীজঘাটে খুজি
গন্ধে গন্ধে স্বর্বস্বান্ত হয়ে
রাতশেষে, তোমার কাছেই
তোমার সুগন্ধি ধার চাই।

ক্ষুদ্র-২

কি অদ্ভুতভাবে ভালবাসাগুলো
জমিয়ে রেখেছি গোপন ড্রয়ারে
কান্নার মত বিহবল আবেগও
দূর্বল করেনি খামের সুগন্ধিকে।
কি অদ্ভুত হাসিমুখ
একে দেয় জলছবি
পাহারাদার সেনানীর চোখে।

ক্ষুদ্র-১

আমার কাছে রোদেলা দুপুরই ছিলে তুমি
সিড়ি বেয়ে ঊঠা লতানো গোলাপ
রোদ নেমে এসেছিল যেন সোনালী শিশির।

আগন্তুক

আগন্তুক প্রহরী আর রুপকথার নাটাই
কে কার হাত ধরেছিল?
পৃথিবীটা তবুও সুতোতেই বাঁধা
যেন নিয়তি
যেন আগন্তুক
যেন নিঃশেষ।
ব্যাক্তি রত ছিল
পতঙ্গের ছিল রতি
ব্যাক্তির সাথে সেকি ভীষন ধস্তাধস্তি
পতঙ্গের প্রতিকৃতিতে।
পতঙ্গ আগুনের দিকে ছুটেছিল
নাকি আগুন ডেকেছিল পতঙ্গকে
নাকি পুরোটাই ব্যাক্তিগত?
সে নিয়েও সন্দেহের সীমাহীন বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে
পৃথিবীটা আজো সুতোয় বাঁধা,
যেন আগন্তুক
যেন নিঃশেষ
যেন নিয়তি।

বোকা প্রজাপতি


শুধু কারো কারো হৃদয় জুড়ে নেমে আসে
সন্ধ্যার রঙের মত উদাসী আলোর প্রপাত।

কি যে হয়, পেয়ে বসে বিহবলতায়
চোখ, হৃদয়, মস্তিষ্ক সব জুড়িয়ে যায়
সব জুড়াতেই যেন নেমে আসে সন্ধ্যার রঙের মত
উদাসী আলোর প্রপাত।
আহত শিকারের মত গজরাতে থাকি
আচড়াতে থাকি অনুভূতি দিয়ে অনুভূতি
প্রগলভ কিশোরটি এখনো শিমুলের রঙয়ে
প্রেমিকার ছোপ খুজে পেয়ে কেঁপে উঠে
আর সবুজ হৃদয়ে
শুয়োপোকারা অনুভূতির নামে হেটে বেড়ায়
শুয়োপোকারও নির্বান হয়
নির্বানের আনন্দের ছাপ প্রজাপতির ডানায়।
শুধু কারো কারো হৃদয় জুড়ে নেমে আসে
সন্ধ্যার রঙের মত উদাসী আলোর প্রপাত।

স্বেদবিন্দু


আমার পাশে বসে থাকা নিরীহ কবির শব্দগুলো
আমার বোধের প্রাচীর টপকে সীমানা পাড়ি দিচ্ছিলো
ঈশ্বরের মত নিরাবেগ ভাবালুতায় আমি উদ্বেল
তাই বোধের অবাধ বিচরনের মাঝে নির্বোধ থেকেও
আমি জ্ঞানী পুরুষের মত ঈশ্বরচিন্তিত হয়ে যাই।
অর্থহীন সব; শুধু ঘাসফুল, ফড়িং আর
সার্কাস রমনীর উৎফুল্ল নিতম্ব ছাড়া
ভাবলেষহীন মুখের সব আনন্দেরর অভাব
রেসের ঘোড়ার মত যেখানে টগবগ
দর্শকদের চোখ কবির মতই ফড়িং হয়ে
ছুটে বেড়ায় দেহের এক ঘাসফুল হতে অন্যত্র
আর শীতল মুখের গন্তব্যে পৌছেই মৃত্যুভয়ে
ইশ্বরচিন্তার মত মগ্নতায় নির্বাসন নেয়।
আর তারপরই সর্বহীনতার মাঝে
হৃদয়ের প্রতিটি কুঠুরী থেকে
ভালোবাসা নামক জোনাকীরা মার্চ করে বেরিয়ে আসে
প্রতিটি রক্তকনায় তাদের চোরাগোপ্তা হামলায়
সোনালী শিশির আর অশ্রুর মত আনন্দে সৃষ্টি করে স্বেদবিন্দু।
যে আঙ্গুলটি আমার ঠোট ছুয়েছিলো অজান্তে
সে জানেনি, কিন্তু জোনাকিরা আর কখনোই
সে দূর্গ ছাড়েনি, অন্তর্গত স্বেদবিন্দুর লোভে।